Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
নাটোরে আউশের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
বিস্তারিত

নাটোর, ২৬ জুন, ২০১৮ (বাসস): জেলায় আউশের আবাদি জমি ক্রমশঃ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় সাত হাজার ৫০ হেঃ জমিতে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রানির্ধারণ করেছিণ কৃষি বিভাগ। লক্ষ্যমাত্রাছাড়িয়ে একহাজার ৭৬২ হেক্টর অতিরিক্ত আবাদি জমিতে অর্থাৎমোট আট হাজার ৮১২ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ করা হয়েছে। চালের বাড়তি বাজার দর ও আগাম বর্ষণের অনুকহল পরিবেশের পাশাপাশি সরকানি প্রণোদনা ও প্রদর্শণী খামার স্থাপনের সুফল হিসাবে আউশের আবাদি জমি বৃদ্ধি পেয়েছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া, বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলার কৃষকরা মূলতঃ আউশ আবাদ করেন। এর মধ্যে বড়াইগ্রাম উপজেলায় সর্বাধিক ২ হাজার ৭৯২ হে্টর জমিতে , এরপর পর্যায়ক্রমে গুরুদাসপুর উপজেলায় ২ হার ৫১ ৫ হেক্টর  এবং সিংড়ায় ২ হাজার ৪৩০ হেক্টর  জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। এছাড়া লালপুর উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর এবং হালতি বিল অধ্যুষিত নাটোর সদর উপজেলায় ২৭৫ হেক্টর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় ২৫০ হেক্টরে আউশ ধান আবাদ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে জেলায় আউশ ধানের আবাদি জমির পরিধি ক্রমশ বেড়েছে। ২০১৫ সালে জেলায় ৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছিল। এর পরবর্তী ২ বছরে যথাক্রমে ৬ হাজার ২৬০ হেক্টরে এবং ২ হাজার ৭০৮ হেক্টর আউশের আবাদি জমি থেকে অমত্মতঃ ২২ হাজার ৩০ টন চাল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়েছে।

অবশিষ্ট জমির পুরোটাই উচ্চফলনশীল জাতের। এর মধ্যে ব্রিধান ৪৮ সবচেয়ে জনপ্রিয়। এছাড়া রয়েছে ব্রি ধান-৫৫ ও বিআর ২৬। দীর্ঘ সময় ধরে কৃষকরা জমিতে আউশ ধানের চারা রোপন করেন। মধ্য মার্চ থেকে রোপন কার্যক্রম শুরু করে অব্যাহত থাকে জুন মস পর্যন্ত। বীজতলায় কাল গণনা শুরু করে ধান ওঠা পর্যন্ত জীবনকাল একশ’ থেকে ১১৫ দিন পর্যন্ত। বিঘা প্রতি ফলন ১৭ থেকে ২০ মণ। আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ধান কাটার ভরা মৌসুম।

কৃষি বিভাগ চলতি মৌসুমে জেলার একহাজার কৃষককে আউশ প্রণোদণা কমসূচির আওতায় মোট পাঁচ টন বীজ, ২০ টন ইউরিয়া সার, ১০ টন করে ডিএপি ও এমওপি সার এবং পাঁচ লাখ টাকার সেচ সহায়তা প্রদান করেছ। প্রণোদনার পাশাপাশি চাষি পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকেল্পর আওতায় সারা জেলাতে আউশের ১৫০ টি প্রর্দশনী খামার স্থাপন করা হয়েছে। জেলার ১৫০ জন নির্বাচিত কৃষককে তাদের এক একর জমিতে আউশ আবাদের সহায়তা বাবদ প্রত্যেককে ১০ কেজি করে বীজ , ১৬ কেজি ইউরিয়া, ২২ কেজি টিএসপি, ১৫ কেজি এওপি এবং এক কেজি করে দস্তা ও বোরণ সার প্রদান করেছে কৃষি বিভাগ। এসব খামারগুলোতে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকদের আউশ চাষাবাদ পদ্ধতির মান উন্নয়ন কৌশল সম্পর্কে অবহিতকরণ তথা প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন।

নাটোর সদর উপজেলার বড় হরিশপুর কৃষি ব্লকে ক্লাষ্টার আকারে চারটি আউশের প্রদর্শনী খামার স্থাপন করা হয়েছে।

কৃষক মোঃ নুরুজ্জামান  জানান, সময়ে সময়ে কৃষি বিভাগের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমার জমির প্রদর্শনী খামারে আসছেন এবং সার ও সেচের প্রয়োগ, আগাছা ও কীট পতঙ্গ দমনের ব্যাপারে পরামর্শ দিচেছন। কৃষকদের সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শস্য কর্তনের মাধ্যমে এবস প্রদর্শনী খামারের উৎপাদন চিত্র পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং প্রদর্শনী খামারবিহীন অন্য জমির আউশ উৎপাদনের তুলনামূলক চিত্র কৃষকদের অবহিত করা হবে বলে জানালেন এ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাবুল হোসেন ।

বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল আহমদ বলেন, এবার  আগাম বর্ষার কারণে মুগ ডালের দ্বিতীয় পর্যায়ের জমি এবং আগাম পাটের পরিত্যক্ত জমিতে কৃষকরা আগ্রহ সহকারে আউশ চাষ করছেন। আউশের আবাদি জমি একারণে অনেকটা বেড়েছে। ফলন বৃদ্ধির জন্যে কৃষি বিভাগের সবরকম তৎপরতা অব্যাহত আছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বাসসকে বলেন, বাজারে চালের ন্যায্য মূল্য, আগাম বর্ষায় অনুকূল পরিবেশ ও আবহাওয়া, সর্বোপরি সরকারের প্রণোদনা ও প্রদর্শনী খামার স্থাপন কর্মসূচির কারণে জেলার আউশের আবাদি জমির পরিধি বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকদের নিরলস পরিশ্রম, কৃষি বিভাগের সহযোগীতা, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আশাকরি ফলন ও হবে আশানুরূপ।

ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
26/06/2018
আর্কাইভ তারিখ
27/06/2018